চট্টগ্রাম বন্দর ২৪ ঘণ্টা চালু না থাকলে পোশাকশ্রমিকের বেতন-ভাতা পরিশোধের বিষয়ে মালিকেরা দায়িত্ব নেবেন না, এমন মন্তব্য করেছেন পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান।
কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ঈদ আসছে। তবে চট্টগ্রাম বন্দরে কাজ হচ্ছে না। আমাদের আমদানি-রপ্তানি হচ্ছে না। চীন থেকে ১৪ দিনে চট্টগ্রাম বন্দরে কাঁচামাল আসছে কিন্তু ঢাকায় পণ্য আসতে লাগছে ১৮ দিন। তাহলে আমরা কীভাবে ব্যবসা করব?’
সরকারের উদ্দেশে কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আপনাদের অনেক ইস্যু আছে, সংস্কার করুন, কিন্তু আমাদের কবর দিয়ে নয়, শিল্প ধ্বংস করে নয়।’ তিনি আরও বলেন, ২৪ ঘণ্টা চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। আমদানি-রপ্তানি সচল রাখতে হবে।
তা না হলে ঈদের আগে পোশাকশ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার দায়িত্ব শিল্পের মালিকেরা নিতে পারবেন না। আমাদের রপ্তানি হবে না। কনটেইনার রাস্তায় পড়ে থাকবে। তাহলে আমরা কোথায় টাকা পাব? কোথা থেকে শ্রমিকের বেতন-ভাতা দেব?
বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট সম্মিলিত পরিষদের ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে এই জোটের সভাপতি ও সংগঠনের সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান এ কথা বলেন। রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আজ বুধবার এক অনুষ্ঠানে সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা আবুল কালাম ইশতেহার তুলে ধরেন।
এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত কেন্দ্র করে রাজস্ব প্রশাসনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে গত সপ্তাহ থেকে কলমবিরতি কর্মসূচি পালন করছেন কর্মকর্তারা।
এতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। আজ থেকে সংস্থাটির চেয়ারম্যানকে লাগাতার অসহযোগিতা করার কর্মসূচির পাশাপাশি আগামী শনিবার থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে ঐক্য পরিষদ।
সম্মিলিত পরিষদের ইশতেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে পোশাকশিল্পের মালিকদের গাড়ি-বাড়ি বিক্রি করা হচ্ছে।
এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। অত্যন্ত কষ্টের ও লজ্জার। এই লজ্জা থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই। সে জন্য যেসব শিল্পমালিক পারবেন না, তাঁদের নিরাপদে প্রস্থানের নীতি (এক্সিট পলিসি) প্রণয়নে আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলছি।’
শ্রম, কর্মসংস্থান ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন গতকাল মঙ্গলবার রাতে জানিয়েছেন, টিএনজেড লিমিটেড ও মাহমুদ গ্রুপের মালিকানাধীন জমি, বাড়ি, কারখানা ও অন্যান্য স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে শ্রমিকদের পাওনাদি দ্রুত পরিশোধ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, টিএনজেড ও মাহমুদ গ্রুপের মালিকদের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ডার্ড গ্রুপ, জেনারেশন নেক্সট, রোয়ার ফ্যাশনের মালিকদের দেশে ফেরানোর জন্য ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রথম আলোর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
Post a Comment