মাঝখানে কয়েক বছর দেশে এর উপদ্রব তেমন না থাকলেও এ বছর আবার দেখা দিয়েছে
চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ
সাধারণত ২ থেকে ৭ দিনের মধ্যে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এর লক্ষণ দেখা দেয়। এ রোগে অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর, অস্থিসন্ধিতে প্রচণ্ড ব্যথা (বিশেষত হাত, কবজি, গোড়ালি, কাঁধ ও হাঁটুতে), মাথাব্যথা, পেশিব্যথা, ক্লান্তি, ত্বকে ফুসকুড়ির মতো লক্ষণ দেখা যায়। অস্থিসন্ধিতে ব্যথা থাকে, যা কয়েক সপ্তাহ, মাস বা বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
কখনো কখনো এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না। রোগটি সাধারণত আকস্মিক উচ্চমাত্রার জ্বর, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা এবং চামড়ায় ফুসকুড়ি দিয়ে শুরু হয়। ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে রোগের শুরুতেই, তবে অনেক সময় রোগ শুরু হওয়ার ২ থেকে ৩ দিন পর জ্বর কমতে শুরু করলে ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হলে মানুষ প্রায়ই ডেঙ্গু বা জিকা ভাইরাসের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। তবে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস সংক্রমণে সাধারণত অস্থিসন্ধিতে প্রচণ্ড ব্যথা থাকে।
চিকুনগুনিয়া ভাইরাস সাধারণত গুরুতর রোগ নয়। তবে বেশি বয়সী এবং ইতিমধ্যে অন্য স্বাস্থ্যসমস্যা আছে (ক্যানসার, ডায়াবেটিস, লিভার, কিডনিতে সমস্যা ইত্যাদি), এমন ব্যক্তিদের বেলায় আরও গুরুতর লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
চিকুনগুনিয়ার চিকিৎসা
চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। ওষুধ সাধারণত লক্ষণগুলো উপশম করার জন্য ব্যবহার করা হয়। জ্বর কমানোর ওষুধ, ব্যথা উপশম করার ওষুধ, প্রচুর তরল পান করা এবং পরিমিত বিশ্রাম নিলে ৫ থেকে ১০ দিনে আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত সুস্থ হয়ে যায়। তবে তীব্র রোগলক্ষণ ও গুরুতর কোনো সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
চিকুনগুনিয়া ভাইরাস প্রতিরোধ
চিকুনগুনিয়া ভাইরাস প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো মশার কামড় এড়ানো। মশারি খাটিয়ে, লম্বা হাতার জামা ও লম্বা প্যান্ট পরে, প্রয়োজনে কাজের জায়গায় মশারি ব্যবহার করে, মশারোধী স্প্রে ও লোশন ব্যবহার করে আমরা মশার কামড় এড়াতে পারি। বাড়ির চারপাশে পানি জমতে না দেওয়া এবং যেখানে–সেখানে যেন মশা ডিম পাড়তে না পারে, সেদিকেও খেয়াল
ডা. কাকলী হালদার, সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ
إرسال تعليق