স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারে পিছিয়ে বাংলাদেশ

 

বিশ্বের ৪টি অঞ্চলের ১২টি নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের মধ্যে স্মার্টফোন মালিকানায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ৯টি দেশ /রয়টার্স প্রতীকী ছবি


বিশ্বের ৪টি অঞ্চলের ১২টি নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের মধ্যে স্মার্টফোন মালিকানায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ৯টি দেশ। এমনকি মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারেও বাংলাদেশ তাদের চেয়ে পিছিয়ে। বিগত সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে প্রচুর ব্যয় করলেও স্মার্টফোনের দাম মানুষের হাতের নাগালে আনতে পারেনি। 


মানুষের মধ্যে স্মার্টফোনের ব্যবহারে চাহিদা তৈরি করতে পারেনি। ডিজিটাল সাক্ষরতার অভাবে অর্ধেক জনগোষ্ঠীই এসব সুবিধার বাইরে থাকছে।


মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈশ্বিক সংগঠন গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশন (জিএসএমএ) চলতি বছরের অক্টোবরে ‘দ্য স্টেট অব মোবাইল ইন্টারনেট কানেকটিভিটি ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার নিম্নমধ্যম আয়ের ১২টি দেশের মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার–সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিক নিয়ে করা জরিপের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।


যাঁরা বলছেন জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের দরকার নেই, তাঁরা জানেনই না কীভাবে এগুলো ব্যবহার করে জীবনকে এগিয়ে নেওয়া যায়। অর্থাৎ তাঁদের কাছে সেই চাহিদা তৈরি করা যায়নি।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন

বিশ্বের ৪টি অঞ্চলের ১২টি নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের মধ্যে স্মার্টফোন মালিকানায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ৯টি দেশ। এমনকি মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারেও বাংলাদেশ তাদের চেয়ে পিছিয়ে। বিগত সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে প্রচুর ব্যয় করলেও স্মার্টফোনের দাম মানুষের হাতের নাগালে আনতে পারেনি। মানুষের মধ্যে স্মার্টফোনের ব্যবহারে চাহিদা তৈরি করতে পারেনি। ডিজিটাল সাক্ষরতার অভাবে অর্ধেক জনগোষ্ঠীই এসব সুবিধার বাইরে থাকছে।



মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈশ্বিক সংগঠন গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশন (জিএসএমএ) চলতি বছরের অক্টোবরে ‘দ্য স্টেট অব মোবাইল ইন্টারনেট কানেকটিভিটি ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার নিম্নমধ্যম আয়ের ১২টি দেশের মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার–সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিক নিয়ে করা জরিপের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।



যাঁরা বলছেন জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের দরকার নেই, তাঁরা জানেনই না কীভাবে এগুলো ব্যবহার করে জীবনকে এগিয়ে নেওয়া যায়। অর্থাৎ তাঁদের কাছে সেই চাহিদা তৈরি করা যায়নি।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন

বিশ্ববিদ্যালয়







বড় বাধা সাক্ষরতা ও ডিজিটাল দক্ষতার অভাব



ইন্টারনেট ব্যবহারে বাংলাদেশ অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে। এখানে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের হার শহরে ৪৩ ও গ্রামে ২৭ শতাংশ। তবে প্রতিদিন শহরের ৪০ শতাংশ ও গ্রামের ২৪ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। ইন্টারনেট ব্যবহারেও শুধু ইথিওপিয়া বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে। তবে উগান্ডার গ্রামে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বাংলাদেশের চেয়ে কম, আবার শহরে বেশি।



জরিপে দেখানো হয়েছে, বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ মোবাইল ইন্টারনেট সম্পর্কে জানেন; কিন্তু ব্যবহার করেন না।

মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শহর ও গ্রামের মানুষের কাছে বড় বাধা হচ্ছে সাক্ষরতা ও ডিজিটাল দক্ষতার অভাব। এরপর শহরের মানুষের কাছে নিরাপত্তা ও গ্রামের মানুষের কাছে সামর্থে৵র বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে।

ইন্টারনেট ব্যবহারের বাধা হিসেবে গ্রামের ১১ শতাংশ ও শহরের ৮ শতাংশ মানুষ স্মার্টফোনের দামের বিষয়টি জানিয়েছেন। 


অন্যদিকে শহরের ২৮ শতাংশ ও গ্রামের ১৯ শতাংশ বলেছেন, লিখতে ও পড়তে না পারার কারণে তাঁরা মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন না। কিন্তু যাঁরা ইতিমধ্যে ব্যবহার করেছেন, তাঁদের আরও বেশি মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ডেটার দাম সবচেয়ে বেশি বাধা বলে উল্লেখ করা হয়। এরপরে আছে যথেষ্ট সময় না থাকা।


জিএসএমএর জরিপ বলছে, বাংলাদেশে শহরের ৪১ শতাংশ এবং গ্রামের ২৬ শতাংশ মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। যেখানে বাংলাদেশের চেয়ে মিসর, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, গুয়াতেমালা ও মেক্সিকো এগিয়ে রয়েছে। ইথিওপিয়া ও উগান্ডা শুধু বাংলাদেশের পেছনে আছে।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে বেশি আগ্রহী।

রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের গুরুত্ব বা প্রাসঙ্গিকতা তৈরির জন্য অন্যান্য দেশ যে গতিতে নীতি গ্রহণ করেছে, তা বাংলাদেশে হয়নি।


 ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়াতে হলে নীতিগত বিষয়ে দ্রুত পরিবর্তন দরকার। তিনি আরও জানান, ডেটার খরচও কমানো যাবে, যদি সরকার সংশ্লিষ্ট নীতিগুলোতে পরিবর্তন আনে।


জিএসএমএ বলছে, বাংলাদেশে গত পাঁচ বছরে মোবাইল ইন্টারনেট সম্পর্কে সচেতনতা বেড়েছে মাত্র ৩ শতাংশ মানুষের। ২০১৯ সালে ৭২ শতাংশ মানুষ মোবাইল ইন্টারনেট সম্পর্কে জানতেন। তা ২০২৩ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৭৫ শতাংশে।



কথা বলা, ভিডিও দেখায় ইন্টারনেটের ব্যবহার বেশি



ভিডিও কল ও অনলাইন ভিডিও দেখতে মোবাইল ইন্টারেনেটের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে, যা ৯৩ শতাংশ। এরপরে ব্যবহৃত হয় অনলাইনে কথা বলায়, তাৎক্ষণিক বার্তা আদান–প্রদান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার ও বিনোদনের জন্য। সবচেয়ে কম ১২ শতাংশ মানুষ ব্যবহার করেন কৃষিবিষয়ক তথ্যের জন্য। আর চাকরি খুঁজতে ৩১ শতাংশ, অনলাইনে আয়ের জন্য ৪৫ শতাংশ, পড়াশোনা ও শেখা এবং সরকারি সেবার জন্য ৪৮ শতাংশ, খবর পড়তে ৬৮ শতাংশ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা বলছেন জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের দরকার নেই, তাঁরা জানেনই না কীভাবে এগুলো ব্যবহার করে জীবনকে এগিয়ে নেওয়া যায়। অর্থাৎ তাঁদের কাছে সেই চাহিদা তৈরি করা যায়নি।



 এ ছাড়া প্রতারকদের জন্য ডিজিটাল জগৎ একটি স্বর্গরাজ্য। ডিজিটাল সাক্ষরতা না থাকায় এবং নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এসব মানুষ নিজেরাই স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিচ্ছেন।
























0 تعليقات

إرسال تعليق

Post a Comment (0)

أحدث أقدم