মণিপুর ও মিজোরামের রাজ্যপাল পরিবর্তন করে কী চাইছে মোদি সরকার

ভারতের মণিপুর রাজ্যে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে সংঘর্ষ চলছেফাইল ছবি-রয়টার্স



ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মণিপুর ও মিজোরাম রাজ্যে নতুন রাজ্যপাল নিয়োগ করল। গতকাল মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকার দেশের যে পাঁচ রাজ্যের রাজ্যপাল বদল করেছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য এই দুই রাজ্য। দেড় বছর ধরে মণিপুরের পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ নরেন্দ্র মোদির সরকার। এবার রাজ্যপাল বদলের মধ্য দিয়ে কেন্দ্র শেষ একটা চেষ্টা করতে চাইছে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।




উপদ্রুত মণিপুরে রাজ্যপাল করা হলো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর অতি ঘনিষ্ঠ আমলা সাবেক কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লাকে। মোদি আমলে চারবার মেয়াদ বৃদ্ধির পর শাহ–ঘনিষ্ঠ আমলা অজয় ভাল্লা গত আগস্টে অবসর নেন। চার মাসের মধ্যেই তাঁকে মণিপুরের দায়িত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার হয়তো নতুন কিছু চিন্তা করছে।




মণিপুরের রাজ্যপালের পদ থেকে মধ্যপ্রদেশের বিজেপির আদিবাসী নেত্রী অনুসূয়া উইকিকে গত জুলাইয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেই থেকে আসামের রাজ্যপাল লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্য মণিপুরেরও দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, উপদ্রুত মণিপুরে কেন্দ্রীয় সরকার হয়তো ভবিষ্যতে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করবে। ভাল্লার নিয়োগ সম্ভবত সেই প্রক্রিয়ার প্রথম পদক্ষেপ।




মণিপুর নিয়ে কেন্দ্র যেমন চিন্তিত, তেমনই উৎকণ্ঠিত মিজোরাম নিয়েও। মণিপুরের অসন্তোষের কিছুটা প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া মিজোরামেও পড়েছে। তবে তার চেয়েও কেন্দ্রের বেশি দুশ্চিন্তা মিয়ানমারের সাম্প্রতিক অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের পালাবদল নিয়ে। বিদ্রোহীরা মিজোরাম সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের চিন প্রদেশ দখল করে নিয়েছে বলে খবর।




মিয়ানমারের চিন প্রদেশের জনগণের অনেকেই আগে থেকেই মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের সঙ্গে মণিপুরের কুকি সম্প্রদায়ের যোগাযোগ ঘনিষ্ঠ। ভবিষ্যতের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মোকাবিলায় মিজোরামের রাজ্যপালের দায়িত্বে তাই আনা হয়েছে সাবেক সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ভি কে সিংকে।



ভি কে সিং অবসর নেওয়ার পর বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৪ ও ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে জিতে মোদি সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যও হয়েছিলেন। ২০২৪ সালের ভোটে তাঁকে প্রার্থী করা হয়নি।




মিজোরামের রাজ্যপাল ছিলেন হরিবাবু কাম্ভামপতি। তাঁকে ওড়িশার রাজ্যপাল করা হয়েছে। ওড়িশার রাজ্যপালের পদ থেকে সরানো হয়েছে ঝাড়খন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসকে। রঘুবর দাসের আমলেই নানা কেন্দ্রীয় ও রাজ্য আইন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য মোদি–ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানি গোড্ডায় তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার সেই চুক্তির কার্যকারিতা পুনর্বিবেচনা করে দেখছে।




আগামী বছর বিহারে বিধানসভার ভোট। তার আগে সেখানে রাজ্যপাল করে আনা হলো মোদি–ঘনিষ্ঠ কেরালার রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানকে। বিহারের রাজ্যপাল রাজেন্দ্র বিশ্বনাথ আরলেকরকে পাঠানো হলো কেরালায়। আরিফ মহম্মদ খানের সঙ্গে কেরালার বামপন্থী মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সরকারের নানা ইস্যুতে অনেক দিন ধরেই খটাখটি চলছিল।





 

0 تعليقات

إرسال تعليق

Post a Comment (0)

أحدث أقدم