মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুসলিমদের ভোট কার পক্ষে যাবে

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুসলিমদের ভোট কার পক্ষে যাবে


৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে এখন গোটা বিশ্ব। এই নির্বাচণের ওপর নির্ভর করছে আগামী বিশ্বের ভবিষ্যৎ। নির্বাচনী প্রচারণাতেও বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে সাম্প্রতিক ইস্যু। বিশেষ করে গাজাসহ মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনা।
একদিকে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস গাজা ইস্যুতে অবস্থান অপরিবর্তিত রাখার ইঙ্গিত দিয়েছেন। যার অর্থ, নির্বাচনে জিতলে গাজায় গণহত্যা এবং লেবাননে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালাতে ইসরাইলকে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাবেন তিনি।

অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলার প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প বরাবরই ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ‘প্রবল সমর্থক’ হিসেবে পরিচিত। তবে যেহেতু বর্তমান বাইডেন-কমলার নেতৃত্বাধীন বর্তমান মার্কিন প্রশাসন ইসরাইলকে ‘নির্বিচারে’ গণহত্যা চালাতে সাহায্য করে যাচ্ছে, তাই আরব ও মুসলিম ভোটারদের একটি বড় অংশ আসন্ন নির্বাচনে ট্রাম্পকে ভোট দেবেন বলে মনে করছে তাঁর ক্যাম্পেইন।

জর্জিয়া এবং নর্থ ক্যারোলিনার মতো দক্ষিণাঞ্চলীয় দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে বিপুল সংখ্যক ইভানজেলিক্যাল খ্রিস্টান রয়েছে। এরা রিপাবলিকান ভোটার, তবে এই সম্প্রদায়ের তরুণদের কারণে ভোটের প্রবণতা পরিবর্তন হতে পারে।

এই তরুণদের দৃষ্টিতে অর্থনীতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলো গর্ভপাত ও বিবাহের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্প্রদায়ের লোকজন ঐতিহ্যগতভাবে ডেমোক্র্যাটদের ভোট দিয়েছে, তবে এবার তাঁরা ইসরাইলের পক্ষে থাকায় বাইডেন প্রশাসনের ওপর ক্ষুব্ধ।

নির্বাচনী জরিপ বলছে, প্রায় ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ আমেরিকান মুসলিম কমলা হ্যারিসকে ভোট দেবেন। এই খবর ডেমোক্র্যাটদের জন্য দুঃস্বপ্নের মতো। আমেরিকান মুসলিমদের মধ্যে ২০১৬ সালে ৬৫ শতাংশ হিলারি ক্লিনটনকে এবং ২০২০ সালে ৮০ শতাংশ জো বাইডেনকে ভোট দিয়েছিলেন। বারাক ওবামার ক্ষেত্রে এই অনুপাত ছিল ২০০৮ সালে ৮০ শতাংশ এবং ২০১২ সালে ৯২ শতাংশ।

কমলা হ্যারিসকে প্রত্যাখ্যানকারী মুসলিম আমেরিকানরা ট্রাম্পকে ভোট দিতে পারেন। বেছে নিতে পারেন তৃতীয় কোনো প্রার্থীকে অথবা ভোট দেওয়া থেকে তাদের সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম মুসলিম সংগঠন আমেরিকান ইসলামিক কাউন্সিলের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, জিল স্টেইনের পক্ষে ৪২ দশমিক ৩ শতাংশ মুসলিম ভোটারের সমর্থন রয়েছে।

মুসলমানরা মার্কিন জনসংখ্যার এক শতাংশ। সংখ্যার বিচারে খুব বেশি নয়। কিন্তু মিশিগান ও পেনসিলভেনিয়ার মতো তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রাজ্যগুলোর জন্য মুসলিম ভোট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর এই বছরের মুসলিম ভোটের ক্ষেত্রে একটাই ইস্যু—গাজা।

মুসলিম আমেরিকানরা তাঁদের ভোটের শক্তিকে সম্মান করেন। তারা কমলা আর ট্রাম্প—উভয় পক্ষের নীতি বিশদভাবে বোঝেন। ঠিকমতো জেনেবুঝেই তাঁরা ভোট দেন।



0 Comments

Post a Comment

Post a Comment (0)

Previous Post Next Post