চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা মামলায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত

 

খুন হওয়া আইনজীবী সাইফুল ইসলাম



চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত । পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।



এরপর পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধাদানের মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামির সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিক।

হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো ৯ আসামি হলেন রুমিত দাস, সুমিত দাস, গগন দাস, নয়ন দাস, বিশাল দাস, আমান দাস, মুন মেথর, রাজীব ভট্টাচার্য্য ও দুর্লভ দাস। তাঁদের মধ্যে শুভ কান্তি দাস একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। অন্যরা পরিচ্ছন্নতাকর্মী।


পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধাদানের মামলায় রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আট আসামি হলেন পার্থ চক্রবর্তী, অপূর্ব শীল, উজ্জ্বল দাস, অপু চন্দ্র সাহা, নিলয় দাস, ধ্রুব দাস, দেলোয়ার হোসেন ও মো. নুরু।



নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নগরের কোতোয়ালি থানায় গত শুক্রবার রাতে হওয়া আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলায় ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন। এরপর পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধাদানের মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।



পুলিশ কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন, দুই মামলার ১৭ আসামিকে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে শুনানি শেষে বিকেলে তাঁদের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।



পুলিশ জানায়, গত মঙ্গল ও বুধবার ভিডিও ফুটেজ দেখে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু তখন হত্যা মামলা না হওয়ায় তাঁদের পুলিশের ওপর হামলার মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর হয়। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বাধা দেন তাঁর অনুসারীরা। 


তাঁরা প্রিজন ভ্যান আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা করে ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় আইনজীবীদের গাড়ি ভাঙচুর, ইটপাটকেল নিক্ষেপের প্রতিবাদে মিছিল বের করেন কিছু আইনজীবী।



একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মিছিল শেষে ফেরার পথে হোঁচট খেয়ে রাস্তায় পড়ে যান সাইফুল। তখন তাঁকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও চারটি মামলা হয়। তিনটি করে পুলিশ, আরেকটি করে নিহত ব্যক্তির ভাই জানে আলম। পাঁচ মামলায় গ্রেপ্তার হন ৩৯ জন।



ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের সংগ্রহ করা ৫২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজের সূত্র ধরে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আইনজীবী সাইফুলকে কোপান ওম দাশ, চন্দন ও রনব। তাঁর নিথর দেহ পড়ে থাকলেও লাঠিসোঁটা দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন অন্যরা। সেখানে আরও ছিলেন ২৫-৩০ জন।




0 تعليقات

إرسال تعليق

Post a Comment (0)

أحدث أقدم